কমপ্লায়েন্স এ্যান্ড সোশ্যাল কমপ্লায়েন্স (Compliance & Social Compliance)

কমপ্লায়েন্স এ্যান্ড সোশ্যাল কমপ্লায়েন্স (Compliance & Social Compliance)

কমপ্লায়েন্স (Compliance) কি?
কমপ্লায়েন্স (Compliance) হলো নির্দিষ্ট নিয়ম, নীতি, আইন এবং মানদণ্ড মেনে চলার প্রক্রিয়া। এটি ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার কার্যক্রমকে নির্দিষ্ট নিয়ন্ত্রণ কাঠামোর মধ্যে রাখার একটি ব্যবস্থা, যা আইনগত ও নৈতিক দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করে ।

কমপ্লায়েন্স-এর ধরণঃ
কমপ্লায়েন্স সাধারণত দুটি প্রধান ভাগে বিভক্ত করা যায়:

১. রেগুলেটরি কমপ্লায়েন্স (Regulatory Compliance)
এটি সরকারি আইন, বিধি-বিধান এবং শিল্প সংক্রান্ত নিয়ম মেনে চলার বিষয়টি নিশ্চিত করে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে তাদের দেশ ও শিল্পের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর (Regulatory Authorities) দ্বারা নির্ধারিত আইন ও নীতিমালা মেনে চলতে হয় ।
উদাহরণ:
শ্রম আইন (Labor Law)
কর আইন (Tax Compliance)
বাণিজ্য আইন (Trade Compliance)
পরিবেশ সংক্রান্ত আইন (Environmental Compliance)

২. কর্পোরেট কমপ্লায়েন্স (Corporate Compliance)
এটি একটি সংস্থার নিজস্ব অভ্যন্তরীণ নীতি, নৈতিকতা ও নিয়ম মেনে চলার উপর ভিত্তি করে। ব্যবসার অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা এবং কর্মচারীদের আচরণ নিয়ন্ত্রণের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ ।
উদাহরণ:
আচরণবিধি (Code of Conduct)
এন্টি-হারাসমেন্ট নীতি (Anti-Harassment Policy)
তথ্য সুরক্ষা নীতি (Data Protection & Privacy Policy)
দুর্নীতি বিরোধী নীতি (Anti-Bribery and Corruption Policy)

Social Compliance (সোশ্যাল কমপ্লায়েন্স) কি?
Social Compliance (সামাজিক সম্মতি) হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা সংস্থাগুলো তাদের কার্যক্রমকে শ্রম আইন, মানবাধিকার, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নীতিমালা এবং নৈতিক ব্যবসার মানদণ্ডের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে পরিচালনা করে। এটি নিশ্চিত করে যে কর্মচারীদের প্রতি সুবিচার করা হচ্ছে, তাদের অধিকার রক্ষা করা হচ্ছে এবং কাজের পরিবেশ নিরাপদ ও মানবিক।

সোশ্যাল কমপ্লায়েন্স-এর প্রধান বিষয়সমূহ:
১. শ্রম অধিকার (Labor Rights)
শিশুশ্রম (Child Labor) সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকতে হবে।
জোরপূর্বক শ্রম (Forced or Bonded Labor) থাকা যাবে না।
ন্যায্য মজুরি (Fair Wages) ও ওভারটাইম প্রদান করতে হবে।
কর্মঘণ্টা (Working Hours) শ্রম আইনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে হবে।

২. স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা (Health & Safety)
কর্মক্ষেত্রে নিরাপদ কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
জরুরি বহির্গমন (Emergency Exits) ও অগ্নি নির্বাপনের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
কর্মীদের স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা দিতে হবে।

৩. বৈষম্যহীন কর্মপরিবেশ (Non-Discrimination)
কর্মচারীদের প্রতি কোনো বৈষম্য করা যাবে না (যেমন লিঙ্গ, ধর্ম, বর্ণ, জাতি, রাজনৈতিক মতাদর্শ)।
সমান সুযোগ (Equal Opportunity) নিশ্চিত করতে হবে।

৪. যৌন হয়রানি ও নির্যাতন প্রতিরোধ (Prevention of Harassment & Abuse)
কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি, শারীরিক বা মানসিক নির্যাতন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
অভিযোগ জানানোর জন্য গ্রিভিয়েন্স মেকানিজম (Grievance Mechanism) থাকতে হবে।

৫. শ্রমিক সংগঠন ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা (Freedom of Association)
কর্মীদের ইউনিয়ন গঠনের ও সংগঠনে যোগদানের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
কোনো শ্রমিককে সংগঠনের জন্য হুমকি দেওয়া বা বরখাস্ত করা যাবে না।

৬. পরিবেশগত দায়বদ্ধতা (Environmental Responsibility)
বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশ সংরক্ষণের নীতি মেনে চলতে হবে।
পানি, বায়ু ও মাটি দূষণ কমাতে উদ্যোগ নিতে হবে।

৭. কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (Corporate Social Responsibility – CSR)
স্থানীয় কমিউনিটির উন্নয়নে অবদান রাখা।
শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে সামাজিক কর্মসূচি গ্রহণ করা।

 

 

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *